কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন কেন্দ্রিয় এক ছাত্রলীগ নেতা। এ ঘটনায় ওই নেতার বিরুদ্ধে থানায় সাধারন ডায়েরী করেছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি। ঘটনাটি ঘটেছে ১২ ডিসেম্বর উপজেলার কচাকাটা থানায়।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ- অর্থ সম্পাদক মেহেদী হাসান তার ফেসবুক আইডি ‘মেহেদি হাসান’ এ শনিবার সকাল ১১টার দিকে এই স্টাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন, “আমার বাবাকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত চাই। ২৫ কুড়িগ্রাম ১ আসনের এমপি সাহেব তার লোকজন দিয়ে আমার চাচার বাড়িতে হামলা করে বাড়ি জমি দখল করেছে। মিথ্যা মামলা করছে। আমার বাবা একজন অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক, বৃদ্ধ মানুষ। তাকে মারপিট করে দখলকৃত বাড়িতে আটকে রেখেছে। আমি ছাত্রলীগের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে দেশরতœ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই। তার সন্ত্রাসী বাহিনী থেকে মুক্তি চাই।”
এর প্রতিবাদে ওইদিন দুপুর ১২ টা ২৬ মিনিটে কুড়িগ্রাম ১ আসনের সংসদ সদস্য তার ‘আছলাম সওদাগর এম.পি’র আইডিতে লেখেন “আমাকে নিয়ে যে পোস্ট করেছে তা সম্পুর্ন মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। ছাত্রলীগের পোস্ট পেয়ে গত জাতীয় নির্বাচনে একদিনের জন্য মাঠে কাজ করতে কেউ দেখেনি। পুরা ফেমিলি যার বিএনপি করে। বিএনপি থেকে এসে ছাত্রলীগের পোস্ট পেলে আওয়ামীলীগের এমপির সমালোচনা করাই স্বাভাবিক।”
ফেসবুক স্ট্যাটাস বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা মেহেদি হাসান জানান, তার পৈত্রিক নিবাস কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা ইউনিয়নের ভোটেরহাইল্যা গ্রামে। সেখানে জালির চর এলাকায় জমিজমা নিয়ে ছমির উদ্দিন গংদের সাথে তাদের বিরোধ চলে আসছিল। ছমির মিয়া সংসদ সদস্যের ছত্রছায়ায় চলে। শনিবার সকালে ছমিরের নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি দল আমার চাচার বাড়িতে হামলা চালায়। বাড়ির সকল সদস্যকে মারপিট করে। এসময় আমার বৃদ্ধ বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কাশেম মাষ্টারের মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং পা ভেঙ্গে দেয়। এছাড়াও তারা মহিলাসহ আরো ছয়জনকে মারাত্মকভাবে আহত করে। এর আগে ছমির মিয়া এমপির মদদে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা করেছে। ফেসবুক পোষ্টটি ঘিরে কেউ মামলা বা জিডি করেছে কিনা আমার জানা নেই।
জাতীয় সংসদ সদস্য আছলাম হোসেন সওদাগর জানান, আমাকে নিয়ে মেহেদি হাসানের ফেসবুক আইডিতে দেয়া পোষ্টটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি আমার আইডিতে এর প্রতিবাদ করেছি। তার বিষয়ে কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগকে আমি অবহিত করেছি।
থানায় জিডির আবেদনকারী ওই উপজেলার কচাকাটা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী জানান, ফেসবুকে পোষ্ট দেখে মনে হয়েছে, আমাদের দলের এবং এমপির সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ভাইয়ের (এমপি) সাথে পরামর্শ করে থানায় জিডি করা হয়েছে।
কচাকাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব আলম জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ৮/৯জন আহত হয়েছে। আমরা উভয় পক্ষের ০৬ জনকে আটক করেছি। এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে মামলা দায়ের হবে। এছাড়া আটকদের বিরুদ্ধে আলাদা মামলার পরোয়ানা জারি ছিলো। ফেসবুকের পোষ্ট ঘিরে জিডির সত্যতা নিশ্চিৎ করে বলেন, পরবর্তিতে এমপি মহোদয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।