কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার পূর্ব রামরামসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে স্লিপ বরাদ্দের টাকা উত্তোলণ ও আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে । এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ওই বিদ্যালয়ের নামে বিদ্যালয় উন্নয়ন পরিকল্পনা (স্লিপ) এর ৫০ হাজার টাকা, রুটিন মেইন্টেনেন্স এর ৪০ হাজার টাকা এবং প্রাক- প্রাথমিক শ্রেণীর ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। নিয়ম অনুয়ায়ী প্রাক- প্রাথমিকের টাকা সোনালী ব্যাংক, ফুলবাড়ী শাখা কুড়িগ্রাম প্রধান শিক্ষকের একক হিসাবে এবং স্লিপ ও রুটিন মেইন্টেনেন্স এর টাকা সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হিসাবে জমা হয়। বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুবাদে প্রধান শিক্ষক খাদিজা খাতুন গোপনে সভাপতি আবু মুসার স্বাক্ষর জাল করে উক্ত যৌথ হিসাব থেকে দুই কিস্তিতে ৮২ হাজার টাকা উত্তোলণ করেন।
ওই বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী সোহেলের বাবা গোলাম মোস্তফা বলেন, শিক্ষকরাই যদি জাল-জালিয়াতি করেন তাহলে তাদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা কি শিখবে ? এ ঘটনার বিচার না হলে ছেলেকে অন্য স্কুলে ভর্তি করাবো।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হারুন অর রশিদ ও স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন জানান, ভবনের দেয়ালের প্লাস্টার খুলে গেছে, শৌচাগার জরাজীর্ন, শ্রেণী কক্ষের বে অধিকাংশই ভাঙ্গা। অথচ ৩ মাস আগে টাকা তুলে প্রধান শিক্ষক কাজ না করে টাকা পকেটস্থ করেছেন।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবু মুসা বলেন, স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলনের বিষয়ে ১৩ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেই। ১৪ ডিসেম্বর প্রধান শিক্ষক তড়িঘড়ি করে ২ হাজার টাকায় বিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড ও ৮ হাজার টাকায় একটি স্লিপার স্থাপন করেন। বাকি ৭২ হাজার টাকা প্রধান শিক্ষক আত্মসাৎ করার পায়তারা করছেন বলে জানান তিনি।
স্বাক্ষর জাল করার বিষয়টি অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক খাদিজা খাতুন বলেন, বরাদ্দ অনুযায়ী বিদ্যালয়ের কাজ করা হয়েছে।
সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, ফুলবাড়ী শাখা ব্যবস্থাপক শাহিন ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তদন্ত করে জাল স্বাক্ষরের বিষয়টি প্রমানিত হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার এরশাদূল হক অভিযোগের অনুলিপি পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান জানান, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।