অর্থনীতিতে চাহিদা বৃদ্ধিসহ নানামুখী প্রভাবে ব্যাংকে নগদ টাকার সংকট দেখা দিয়েছে। ঈদের আগে শুরু হওয়া এই সংকট দিন দিন প্রকট হচ্ছে। এর ফলে বেশি সুদেও প্রয়োজনীয় টাকা মিলছে কলমানিতে। ফলে সংকট সামাল দিতে প্রতিদিনই বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বারস্থ হচ্ছে অনেক ব্যাংক। প্রাপ্ততথ্য বলছে, চলতি মে মাসের প্রথম ২৩ দিনে (১০ কার্যদিবস) সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোকে প্রায় সাড়ে ৩৯ হাজার কোটি টাকার বেশি তারল্য ও রেপো সহায়তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মাত্র ১০ কার্যদিবসে এত বেশি পরিমাণ তারল্য সহায়তা দেওয়ার নজির অতীতে খুবই কম দেখা গেছে।
ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার সংকট তৈরির পেছনে তিনটি কারণকে চিহ্নিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এগুলো হলো- আমানতের প্রবৃদ্ধি ব্যাপকহারে কমে যাওয়া, আমদানির চাপে ডলার কিনে এলসির দায় পরিশোধ ও বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা বৃদ্ধি।
নগদ অর্থের সংকট দেখা দিলে একদিনের জন্য এক ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে টাকা ধার নেয়, যা কলমানি নামে পরিচিত। ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তোলার চাপ বাড়ায় রোজা শুরুর আগেই এ বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। এই অস্থিরতা ঈদের আগমুহূর্তে আরও তীব্র হয়। ধারণা করা হয়েছিল, ঈদের পর হয়তো কলমানি বাজারের অস্থিরতা কমে আসবে। কিন্তু ঈদের পরও অস্থিরতা কমার কোনো লক্ষণ নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ঈদের আগে শেষ কার্যদিবসে এই বাজারের গড় সুদের হার ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ। ঈদের পর প্রথম কার্যদিবসে তা ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশে নেমে আসে। সেই সুদহার বাড়তে বাড়তে গতকাল ৪ দশমিক ৭৭ শতাংশে উঠেছে। এদিন লেনদেন হয়েছে ৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। আগের কার্যদিবসে ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ সুদে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা। তবে এই বেশি সুদেও কলমানিতে প্রয়োজনীয় টাকা মিলছে না। ফলে সংকটে পড়া ব্যাংকগুলো বাধ্য হয়েই প্রায় প্রতিদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বারস্থ হচ্ছে।