শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায়, ৬৯ বছর বয়সে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। অভিনেতা আব্দুল কাদেরের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে আব্দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।
অনেকদিন ধরে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। ক্যান্সার জটিল আকারে ছড়িয়ে পড়েছিলো সারা শরীরে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে তাকে গত ৮ ডিসেম্বর ভারতের চেন্নাইয়ের ভেলোর শহরের সিএমসি হাসপাতালে নেয়া হয়। চেন্নাইয়ের চিকিৎসকেরা গত ১৫ ডিসেম্বর এই অভিনেতার পরিবারকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার খবর দেন । তারা জানিয়েছিলেন, তার অবস্থা সংকটাপন্ন, ক্যানসার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে। শারীরিক দুর্বলতার কারণে তাকে কেমোথেরাপি দেওয়া হচ্ছে না।
সেখানে চিকিৎসার পর গত ২০ ডিসেম্বর দেশে আব্দুল কাদেরকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে গত বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ে।
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে ‘বদি’ চরিত্রে অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা পান আব্দুল কাদের। এছাড়া হুমায়ূন আহমেদের ‘নক্ষত্রের রাত’ নাটকে দুলাভাই চরিত্রেও দারুণ প্রশংসিত হন তিনি। বহু নাটক-সিনেমা ও টিভি শোতে অভিনয় করে অগণিত মানুষের ভালোবাসা কুড়িয়েছেন এ অভিনেতা। বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’-তে দেখা যেত আব্দুল কাদেরকে। বেশ কিছু সিনেমাতেও অভিনয়ের মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন এবং বেশকিছু বিজ্ঞাপনচিত্রেও কাজ করেছিলেন তিনি।
আবদুল কাদের বাংলাদেশ টেলিভিশনের নাট্যশিল্পী ও নাট্যকারদের একমাত্র সংগঠন টেলিভিশন নাট্যশিল্পী ও নাট্যকার সংসদ টেনাশিনাসের সহসভাপতি। তিনি নাটকের দল থিয়েটারের সদস্য। দলটির ৩০টি প্রযোজনায় এক হাজারের বেশি প্রদর্শনীতে অভিনয় করেছেন তিনি। মঞ্চে তিনি অভিনয় করেছেন ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘এখনো ক্রীতদাস’, ‘তোমরাই’, ‘স্পর্ধা’, ‘দুই বোন’, ‘মেরাজ ফকিরের মা’ নাটকগুলোয়। এছাড়াও আব্দুল কাদের দীর্ঘদিন বাটা বাংলাদেশের কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন।