কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সৎ পিতা ও সৎ ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন নিহতের প্রথম পক্ষের মেয়ে। ঘটনাটি ঘটেছে, জেলার উলিপুর উপজেলার যমুনা সরকারপাড়া এলাকায়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে ওই উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের যমুনা সরকারপাড়া গ্রামের আবু বক্করের পুত্র এক সন্তানের জনক ইউনুছ আলী (৬০) এর সাথে পার্শ্ববর্তী বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের ফকির মোহাম্মদ ন্যালর গ্রামের এক সন্তানের জননী বেগনা বেগম (৪২) এর দ্বিতীয় বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে বেগনা বেগমকে স্বামী ইউনুস আলী ও সৎ ছেলে রফিকুল ইসলাম রফিক (৩৫) প্রায়ই বিভিন্ন অযুহাতে নির্যাতন করত।
ঘটনার দিন ১০ জানুয়ারী রাতে বেগনা বেগম বাড়ির আঙ্গিনায় আগুনের কুন্ডলী জ্বালিয়ে উত্তাপ নিচ্ছিল। এসময় সৎ পুত্র রফিক তাকে পিছন থেকে জাপটিয়ে ধরে। স্বামী ইউনুছ তার শরীরে আগুন লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা তাকে অগ্নিদ্বগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে। খবর পেয়ে বেগনা বেগমের প্রথম পক্ষের মেয়ে নুরজাহান পরদিন সৎ পিতার বাড়িতে গিয়ে মাকে মুমূর্ষ অবস্থায় দেখতে পান। পরে স্বজনদের সহযোগিতায় তিনি তার মাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানেও তার শারীরিক অবস্থা আরো সংকটাপন্ন হলে চিকিৎসক ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব বার্ণ এন্ড প্লাষ্টিক সার্জারী ইউনিট ঢাকায় রেফার্ড করেন। ঢাকায় নেয়ার আগেই ১৬ জানুয়ারী রাতে তিনি মৃতুবরণ করেন। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে নুরজাহান বাদী হয়ে ওই রাতে সৎ পিতা ইউনুস আলী ও সৎ ভাই রফিকুল ইসলামকে আসামী করে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ১৭ জানুয়ারী নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। ময়নাতদন্ত শেষে ওই দিন সন্ধ্যায় বেগনা বেগমের মরদেহ পিতার বাড়ি বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের ফকির মোহাম্মদ ন্যালর গ্রামে দাফন করা হয়।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির মামলা হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনাটি নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য রয়েছে। তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেড়িয়ে আসবে।