লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার (সাময়িক বহিস্কৃত) নগেন্দ্র নাথ রায়কে (৩৯) পিটিয়ে আড়াই লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রলীগের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে।
সোমবার (১৮ জানুয়ারী) বিকেলে উপজেলার গ্রামীণ ব্যাংক সংলগ্ন মমিনের গ্যারেজ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে
আহত নগেন্দ্র নাথ রায় আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের টিপার বাজার এলাকার রমনী কান্ত রায়ের ছেলে। তিনি আদিতমারী উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার পদে কর্মরত।
অভিযুক্তরা হলেনঃ আদিতমারী গ্রামের মালেকুল ইসলাম কেচুর ছেলে সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য ফরহাদ হোসেন মামুন ও একই এলাকার মদিনা বেকারীর মালিক আব্দুস সোবহান ভুঁইয়ার ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটির কার্যকরী সদস্য শাহীন ভুঁইয়াসহ অজ্ঞাত আরো দুই যুবক।
হাসপাতালে বেডে থাকা ব্যাংক অফিসার নগেন্দ্র নাথ রায় জানান, অফিসের চেক নিয়ে সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তুলে পাশের হোটেলে দুপুরের খাবার খেতে বসেন ব্যাংক অফিসার নগেন্দ্র নাথ রায়। খাবার শেষ হলে ছাত্রলীগের শাহীন ও মামুনসহ অজ্ঞাত দুইজন এসে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে টাকা আড়াই লাখ ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। স্থানীয়রা সজ্ঞাহীন অবস্থায় আহত নগেন্দ্র নাথকে উদ্ধার করে আদিতমারী হাসপাতালে ভর্তি করেন। জ্ঞান ফিরে দেখেন তিনি হাসপাতালে ভর্তি। জ্যাকেটের পকেটে থাকা অফিসের আড়াই লাখ টাকাও খোয়া গেছে বলে তিনি দাবী করেন ।
পরে বিষয়টি ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তাদের জানানো হলে সন্ধ্যায় খবর পেয়ে হাসপাতালে আহত নগেন্দ্র নাথকে দেখতে আসেন আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন। এ সময় তার চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের সাথে কথা বলেন এবং থানা পুলিশকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগের সদস্য শাহীন ভুঁইয়া বলেন, রড দিয়ে মারপিট নয়, হাতাহাতি হয়েছে মাত্র।
অপরজন ফরহাদ হোসেন মামুন বলেন, নগেন্দ্র নাথ রায়ের কাছে তিনি এক লক্ষ ১৩ হাজার টাকা পেতেন। আজ না কাল বলে টাকা দিতে টালবাহনা করেন। তিনি আরো বলেন, পাওনা টাকা নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তবে রড দিয়ে পেটানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল অফিসার ডা. তাসনিম কবির বলেন, আহত নগেন্দ্র নাথ রায় মাথার পিছনের অংশে প্রচন্ড আঘাত পেয়েছেন। ক্ষতস্থানে রক্ত জমাট বেঁধেছে। চিকিৎসা চলছে, সুস্থ্য হতে বেশ সময় লাগবে। তাকে রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে প্রেরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, আহত অফিসারের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের বলা হয়েছে। একই সাথে আইনগত ব্যবস্থা নিতে থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের মামুন ও শাহীন নামে দুইজনসহ অজ্ঞাতরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও আহত অফিসারের বরাত দিয়ে জানান তিনি।