• শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ০১:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
সাংবাদিককে রেল কর্মকর্তার হুমকির প্রেক্ষিতে মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ শারীরিক চেকআপের জন্য সিঙ্গাপুরে ডিপজল উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে জাতীয় গণহত্যা দিবস পালিত বাগেরহাটে নষ্ট হচ্ছে জমিদার রায় বাহাদুরের বাড়ি বাগেরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় ওষুধ ব্যবসায়ী নিহত, শিক্ষক আহত রমজান উপলক্ষে চাল ব্যবসায়ীর স্বস্তির অফার রমজানের প্রথম সন্ধায় জমজমাট‌ চন্দ্র-শুক্রের মহাজাগতিক মিলনের দৃশ্য চট্রগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় ফুটপাত দখল মুক্ত করল ডবলমুরিং থানা পুলিশ দারুল ইরফান একাডেমীর দাখিল পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘ভাগ্য’ দিয়ে তেলেসমাতি দেখানো চিত্রনায়ক মুন্নার জন্মদিন




আজ ‘পল্লীকবি’ জসীমউদ্দীনের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী

Reporter Name / ১২৬ Time View
Update : রবিবার, ১৪ মার্চ, ২০২১




পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। এই কবি ১৯৭৬ সালের ১৪ মার্চ ৭৩ বছর বয়সে রাজধানী ঢাকায় মারা যান। ওই দিনই ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের পৈতৃক বাড়ির আঙিনায় প্রিয় ডালিমগাছের নিচে তাকে সমাহিত করা হয়। তার পুরো নাম জসীমউদ্দীন মোল্লা হলেও তিনি জসীমউদ্দীন নামেই পরিচিত। ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি  ফরিদপুর জেলার তাম্বুুলখানা গ্রামে মাতুলালয়ে তার জন্ম। পৈতৃক নিবাস একই জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে। পিতা আনসারউদ্দীন মোল্লা ছিলেন একজন স্কুলশিক্ষক। শৈশবে ফরিদপুর হিতৈষী স্কুলে জসীমউদ্দীনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয়। তারপর ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা (১৯২১),  রাজেন্দ্র কলেজ থেকে আইএ (১৯২৪) ও বিএ (১৯২৯) এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাভাষা ও সাহিত্যে তিনি এমএ (১৯৩১) পাস করেন।

জসীমউদ্দীনের কর্মজীবন শুরু হয় পল্লীসাহিত্যের সংগ্রাহক হিসেবে। স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে দীনেশচন্দ্র সেনের আনুকূল্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক এ কাজে তিনি নিযুক্ত হন। এমএ পাস করার পর থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে দীনেশচন্দ্র সেনের অধীনে রামতনু লাহিড়ী গবেষণা সহকারী ছিলেন। ১৯৩৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে লেকচারার পদে যোগদান করেন। এখানে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত চাকরি করার পর ১৯৪৪ সাল থেকে তিনি প্রথমে বঙ্গীয় প্রাদেশিক সরকার এবং পরে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের প্রচার বিভাগের কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬২ সালে এখান থেকে ডেপুটি ডাইরেক্টর হিসেবে অবসর গ্রহণ করে তিনি ঢাকার কমলাপুরে নিজ বাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন।

জসীমউদ্দীনের কবিত্ব শক্তির প্রকাশ ঘটে ছাত্রজীবনেই। তখন থেকেই তিনি তার কবিতায় পল্লীপ্রকৃতি ও পল্লীজীবনের সহজ-সুন্দর রূপটি তুলে ধরেন। পল্লীর মাটি ও মানুষের সঙ্গে তার অস্তিত্ব যেন মিলেমিশে এক হয়ে গিয়েছিল। কলেজজীবনে ‘কবর’ কবিতা রচনা করে তিনি বিপুল খ্যাতি অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালেই তার এ কবিতাটি প্রবেশিকা বাংলা সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়। কবি হিসেবে এটি তার এক অসামান্য সাফল্য। তার সাহিত্যের নানা শাখায় কাজ করেছেন, যেমন গাঁথাকাব্য, খণ্ডকাব্য, নাটক, স্মৃতিকথা, শিশুসাহিত্য, গল্প-উপন্যাস ইত্যাদি। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘রাখালী’ প্রকাশিত হয় ১৯২৭ সালে।

তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো :  নকশীকাঁথার মাঠ (১৯২৯), সোজন বাদিয়ার ঘাট (১৯৩৩), রঙিলা নায়ের মাঝি (১৯৩৫), মাটির কান্না (১৯৫১), সুচয়নী (১৯৬১), পদ্মা নদীর দেশে (১৯৬৯), ভয়াবহ সেই দিনগুলিতে (১৯৭২), পদ্মাপার (১৯৫০), বেদের মেয়ে (১৯৫১), পল্লীবধূ (১৯৫৬), গ্রামের মায়া (১৯৫৯), ঠাকুর বাড়ির আঙিনায় (১৯৬১), জার্মানীর শহরে বন্দরে (১৯৭৫), স্মরণের সরণী বাহি (১৯৭৮), বাঙ্গালীর হাসির গল্প, ডালিম কুমার ইত্যাদি। তার রচিত বাঙ্গালীর হাসির গল্প (দুই খণ্ড, ১৯৬০ ও ১৯৬৪) ও বোবা কাহিনী (১৯৬৪) উপন্যাসটি সুখপাঠ্য।

 

জসীমউদ্দীন জারিগান (১৯৬৮) ও মুর্শীদ গান (১৯৭৭) নামে লোকসংগীতের দুখানি গ্রন্থ সংকলন ও সম্পাদনা করেন। ১৯৬৮ সালে তার সম্পাদনায় কেন্দ্রীয় বাঙলা উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত হয় জারিগান।  জারিগান একান্তভাবেই বাংলাদেশের নিজস্ব সৃষ্টি। এ গ্রন্থে জারিগানের মোট ২৩টি পালা সংকলিত হয়েছে। গ্রন্থের ভূমিকায় জসীমউদ্দীন জারিগানের উৎস এবং বিভিন্ন এলাকার জারিগানের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন। দ্বিতীয় গ্রন্থটি তার মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয়।

তার নকশীকাঁথার মাঠ কাব্যটি দি ফিল্ড অব এমব্রয়ডার্ড কুইল্ট এবং বাঙ্গালীর হাসির গল্প গ্রন্থটি ফোক টেল্স অব ইস্ট পাকিস্তান নামে ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। বাংলা কবিতার ধারায় জসীমউদ্দীনের স্থানটি বিশিষ্ট। তার কবিতা অনাড়ম্ব্বর কিন্তু রূপময়। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও লোকজীবন জসীমউদ্দীনের কবিতায় নতুন রূপ লাভ করেছে।

বাংলাদেশের মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসিকান্না ও জীবন সংগ্রামের কাহিনীই তার কবিতার প্রধান উপজীব্য। জসীমউদ্দীন প্রেসিডেন্টের প্রাইড অব পারফরমেন্স পুরস্কার (১৯৫৮), রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টর অব লিটারেচার ডিগ্রি (১৯৬৯), বাংলাদেশ সরকারের একুশে পদক (১৯৭৬) ও স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে (মরণোত্তর, ১৯৭৮) ভূষিত হন। তিনি ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কারের জন্যও মনোনীত হয়েছিলেন, কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করেন।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা





আপনার মতামত লিখুন :

Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/deshytvn/public_html/wp-includes/functions.php on line 5583

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও সংবাদ