বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ার স্টেটের প্রতিনিধি পরিষদ সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি একটি জাতিকে স্বাধিকার প্রদানে বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বের জন্যে ভূয়সী প্রশংসা করলো। প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার শারম্যান এ প্যাকার্ডা ১৮ মার্চ স্বাক্ষরিত এক ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একইসাথে এই স্টেট তথা সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিরা উদযাপন করছেন। এর মধ্য দিয়ে বহুজাতিক এ সমাজের বৈচিত্রকে মহিমান্বিত করা হচ্ছে। আমরাও তাদের এ উদযাপনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছি। এমতাবস্থায় প্রতিনিধি পরিষদ তার সর্বোচ্চ প্রশংসা ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রতি।

এর আগে এই স্টেটের গভর্নর ক্রিস্টফার টি সুনুনু বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১ মার্চ স্বাক্ষরিত অপর এক প্রশংসা-স্মারকে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্ন পূরণে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য গতিতে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে হাঁটছে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নন রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য।

স্টেট গভর্নর আরও উল্লেখ করেছেন, ‘মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশকে বিশ্বের গণতান্ত্রিক, সহনশীল ও বহুত্ববাদি জাতি হিসেবে মনে করছে, যার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। তাই নিউ হ্যামশায়ারে বসবাসরত বাংলাদেশিসহ সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিদের এই উৎসবের সাথে আমরাও একাত্মতা প্রকাশ করছি।

স্পিকার এবং স্টেট গভর্নরের স্বাক্ষর করা ঘোষণাপত্র ও প্রশংসাপত্র দুটি ১৯ মার্চ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম এবং বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দের কাছে হস্তান্তর করেন নিউ হ্যামশায়ার স্টেটের রিপ্রেজেনটেটিভ (রিপাবলিকান) আবুল খান।

পিরোজপুরের সন্তান বাংলাদেশি-আমেরিকান আবুল খান গত চার টার্ম যাবত স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আসছেন। তা গ্রহণ করেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মিয়া।

তখন সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের নির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্যে নিউ হ্যামশায়ার স্টেট পার্লামেন্ট ও স্টেট গভর্নরের যে মমত্ববোধ তা প্রতিটি বাঙালিকেই অভিভূত করবে। বিশেষ করে বাঙালি জাতির স্বাধিকারের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে তারই কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান উন্নয়ন-অভিযাত্রায় গোটা প্রশাসনের অকুণ্ঠ সমর্থনের ব্যাপারটি প্রকারান্তরে বাংলাদেশিদের আরও উদ্যমী করবে।

করোনার পরিপ্রেক্ষিতে স্টেট হাউজের সামনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনাড়ম্বর এ অনুষ্ঠানে আবুল খানও অকপটে উল্লেখ করেন, ‘শেখ হাসিনার দূরদর্শিতাপূর্ণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগোচ্ছে, এটি এখন আর গাল-গল্প নয়। কঠিন একটি বাস্তবতা, যা গোটা বাঙালি জাতিকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নিউ হ্যমশায়ার স্টেটেও নানা কর্মসূচি রয়েছে, যা অনুষ্ঠিত হবে করোনা পরিস্থিতি আরেকটু স্বাভাবিক হলে।

এ সময় সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা  আবুল বাশার চুন্নু, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হাজী জাফরউল্লাহও সেখানে ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর ধ্যান-ধারণার সাথে মার্কিন রাজনীতি ও প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করার অভিপ্রায়ে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ সম্মিলিতভাবে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্টেট গভর্নর, স্টেট পার্লামেন্ট  সর্বোপরি মার্কিন কংগ্রেসে এসব পদক্ষেপের সমন্বয় ঘটাচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার। ১৬ মার্চ কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদেও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশের মানুষকে অভিনন্দন, বঙ্গবন্ধুর অবিস্মরণীয় নেতৃত্ব গুণের কথা স্মরণ করে একটি রেজ্যুলেশন উত্থাপন করা হয়। তার আগে জর্জিয়া, নিউজার্সি স্টেট পার্লামেন্টেও রেজ্যুলেশন হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রশংসা এবং তার কন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শিতদাপূর্ণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত রাষ্ট্রের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হওয়ার সুপারিশের কথাও উল্লেখ করা হয়।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ