নতুন করে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো বিশ্বে। দেশে দেশে আবার লকডাউন হচ্ছে। ফ্লাইট বাতিলের পাশাপাশি সীমানা বন্ধের পদক্ষেপ নিচ্ছে অনেক দেশ। অতিদ্রুত ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম করোনার নতুন ধরনের (স্ট্রেইন) অস্তিত্ব মিলেছে বেশ কয়েকটি দেশে। করোনা আবার অনেক দেশে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। মহামারি পুরোপুরি নির্মূল না হতেই লাখ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলাকেই এ জন্য দায়ী করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের নতুন রূপটি এর অন্যান্য ধরনকে দ্রুত প্রতিস্থাপন করছে। ধরনটি আগেরটির চেয়ে অধিক সংক্রামক।
করোনা সংক্রমণের স্বাভাবিক লক্ষণ ছাড়াও করোনার নতুন ধরনে আরও কিছু নতুন লক্ষণের খোঁজ জানা গেছে। নতুন ধরনে জ্বর, শুকনা কাশি, স্বাদ–গন্ধ চলে যাওয়া ছাড়াও কিছু লক্ষণ যুক্ত হয়েছে। এগুলো হলো ক্লান্তি, ক্ষুধামান্দ্য, মাথাব্যথা, ডায়রিয়া, মানসিক বিভ্রান্তি, গলাব্যথা, পেশিব্যথা, ত্বকে র্যাশ, হাত ও পায়ের আঙুলের রং বিবর্ণ হয়ে যাওয়া। সংক্রমিত অনেকেই তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগে হাসপাতালে যাচ্ছেন এবং তাঁদের আইসিইউ সেবার প্রয়োজন হচ্ছে। এমনকি এই নতুন ধরনে অপেক্ষাকৃত তরুণেরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
কী করণীয়?
যে ধরনই হোক, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব করোনাকেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। মাস্ক পরা, বারবার হাত ধোয়া আর দূরত্ব মেনে চলার বিকল্প নেই। অপ্রয়োজনীয় চলাচল ও ঘোরাঘুরি বাদ দিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে যে শিথিলতা চলছে, তা অবশ্যই দূর করতে হবে। এ জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে জরুরি ভিত্তিতে। বিদেশ থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদের সবাইকে পারিবারিক, প্রাতিষ্ঠানিক অথবা ব্যক্তিগত উদ্যোগে দুই সপ্তাহ বিচ্ছিন্ন থাকতে হবে, যাতে করে ভাইরাসের নতুন নতুন ধরন দেশে ছড়াতে না পারে।
এ ছাড়া টিকা নেওয়ার জন্য জনগণকে উৎসাহিত করার ব্যাপক উদ্যোগ নিতে হবে। যে টিকা দেশে দেওয়া হচ্ছে, সেটির দুই ডোজ নেওয়ার ন্যূনতম ১৪ দিন পর থেকে সর্বোচ্চ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়। তাই এই সময়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। সুতরাং টিকা নেওয়ার আগে ও পরে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ