• বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩, ০৪:২৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
মেহেন্দিগঞ্জে চুরি হয়ে যাওয়া সে মসজিদে ড. শাম্মি আহমেদ এর পানি তোলার পাম্প মোটর দান! ওয়াজ মাহফিলে রাষ্ট্রবিরোধী ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেবেনা  শর্তে রফিকুল ইসলাম মাদানীর জামিন! উপজেলা পরিষদে ইউএনওদের ক্ষমতা কেড়ে নিলেন হাইকোর্ট! বাকেরগঞ্জে ৫ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল সহ ৩ জেলে আটক জাজের হাত ধরে আবার নায়িকার ভূমিকায় শাবনূর! বাকেরগঞ্জে জমি আত্নসাত করতে একজনকে হত্যার চেষ্টা প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে পেশাগত দক্ষতার বিকাশ ঘটে, নড়াইল পুলিশ সুপার বরিশালে ভাসমান বেডে তরমুজ আবাদ বিষয়ক মাঠদিবস অনুষ্ঠিত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন নড়াইলে ফসলী জমিতে সেচ দেওয়াকে কেন্দ্র করে ৩ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম!




নোয়াখালীতে ধর্ষণচেষ্টার মামলা করে বাদী বাড়িছাড়া, পরিবার একঘরে

Reporter Name / ১২৭ Time View
Update : সোমবার, ২২ মার্চ, ২০২১




নোয়াখালীতে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করে হুমকির মুখে সন্তানদের নিয়ে এক নারী বাড়িছাড়া হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই নারীর বাবার অভিযোগ, মেয়ে মামলা করায় সমাজপতিরা প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে তাঁর পরিবারকে একঘরে করে রেখেছেন। তাঁকে স্থানীয় মসজিদে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। ছোট বাচ্চাদের স্থানীয় মক্তব ও মাদ্রাসায় যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ঘটনাটি জেলার সুবর্ণচর উপজেলার।

গতকাল রোববার নির্যাতনের শিকার নারীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছোট দোচালা টিনের ঘরের দরজা রশি দিয়ে বেঁধে রাখা। ঘরের পাশের খালি জায়গায় লাগানো টমেটো পেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বোঝা যায়, আপাতত এখানে কেউ থাকেন না।

ওই নারীর বাড়ির ২০০ গজের মধ্যেই তাঁর বাবার বাড়ি। সেখানে গিয়ে কথা হয় তাঁর বাবার সঙ্গে। তিনি বলেন, গত বছরের ৮ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে কেফায়েত উল্যাহ (৪৫) ও মো. বাহার (৪০) তাঁর মেয়ের ঘরে ঢুকে মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। মেয়ের চিৎকার শুনে তিনি এগিয়ে গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁকে ঘুষি মারেন। এতে তাঁর একটি দাঁত পড়ে যায়। তাঁর মেয়ে নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এ গত ১০ আগস্ট একটি মামলা করেন। এই মামলার পর আসামি কেফায়েত উল্যাহর স্ত্রী বাদী হয়ে তাঁর জামাতা ও ছেলের (ওই নারীর স্বামী ও ভাই) বিরুদ্ধে গত ১৯ আগস্ট একই আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে পাল্টা মামলা করেন।

ওই নারীর মামলার আইনজীবী খালেদ মো. সাইফ উদ্দিন কামরুল বলেন, ওই নারীর মামলাটি আদালতের নির্দেশে দুবার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হয়। পাল্টা মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের হাতিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারকে (এএসপি) নির্দেশ দেওয়া হয়। দুই দফা বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনে নারীর মামলার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। নারীর স্বামী ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে করা পাল্টা মামলাটির তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত কেফায়েত উল্যাহর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি কেফায়েত উল্যাহকে গ্রেপ্তার করে চরজব্বর থানার পুলিশ।

ওই নারীর বাবার অভিযোগ, কেফায়েত গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁর পক্ষ নিয়ে মো. এমরাত সওদাগর, মো. সোলেমানসহ সমাজপতিরা দুই সপ্তাহ আগে বৈঠক করেন। তাঁরা তাঁর মেয়েকে আদালত থেকে মামলা তুলে নিতে বলেন। না হলে তাঁর মেয়ে এলাকায় থাকতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত দেন। বাধ্য হয়ে তাঁর মেয়ে এখন দুই সন্তান নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

ওই নারীর বাবার ভাষ্য, সমাজপতিদের সিদ্ধান্তের পর তিনি ১২ মার্চ স্থানীয় মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে যান। তখন তাঁকে মেয়ের মামলা তুলে না নেওয়া পর্যন্ত মসজিদে যেতে নিষেধ করা হয়। বাড়ির ছোট ছেলে-মেয়েদের স্থানীয় মক্তব ও মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

ওই নারীর বাবার বাড়ির দুই প্রতিবেশী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, সমাজপতিরা তাঁদের নিষেধ করেছেন ধর্ষণচেষ্টার মামলার বাদী ও তাঁর বাবার বাড়িতে না যেতে।

অভিযোগের বিষয়ে সমাজপতি এমরাত সওদাগরের ভাষ্য, রাস্তার পাশে সিমের বিচি লাগানো নিয়ে দুই পক্ষের ঝগড়া হয়েছে। এখানে ধর্ষণচেষ্টার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এরপরও মামলা দিয়ে এলাকাকে কলঙ্কিত করেছেন ওই নারী। সমাজের ৫০ থেকে ৬০ জন বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁদের একঘরে করার। তবে মসজিদে নামাজ আদায় করতে এবং বাচ্চাদের মক্তব-মাদ্রাসায় আসতে নিষেধ করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, আদালতে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলার বিষয়টি তিনি জানেন। কিন্তু নারীকে কিংবা তাঁর বাবার পরিবারকে একঘরে করার বিষয়টি তিনি জানেন না। কাউকে একঘরে করার কোনো সুযোগ নেই। নারীর পরিবারও তাঁর কাছে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেননি।

এ বিষয়ে সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এস এম ইবনুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি তিনি মাত্র শুনেছেন। কেউ কারও বাড়িতে যাবেন কি না, সেটা তাঁদের নিজেদের ব্যাপার। কিন্তু বাচ্চাদের স্কুল, মাদ্রাসায় যেতে না দেওয়া বেআইনি। এ ব্যাপারে তিনি খোঁজ নেবেন।

 





আপনার মতামত লিখুন :

Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/deshytvn/public_html/wp-includes/functions.php on line 5583

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও সংবাদ