খুলনা মহানগর জাতীয় পার্টির (জাপা) সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং শিল্প ও বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি শেখ আবুল কাশেম হত্যা মামলায় একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন ছয়জন। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খুলনা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সাইফুজ্জামান হিরো এই রায় ঘোষণা করেন।
দীর্ঘ ২৬ বছর পর ওই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হলো। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরিফ মাহমুদ লিটন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন মো. তারিক হোসেন। তিনি পলাতক। খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন তরিকুল হুদা, আবদুল গফফার বিশ্বাস, ওসিকুর রহমান, মুশফিকুর রহমান, মফিজুর রহমান ও মিল্টন। এর মধ্যে আবদুল গফফার বিশ্বাস সাবেক সাংসদ এবং খুলনার শিল্প ও বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি।
রায়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন আবুল কাশেমের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, ওই সময় পদ্মার এপারের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল আবুল কাশেম হত্যা। কিন্তু ওই হত্যার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি যারা দিয়েছেন, ওই জবানবন্দি অনুযায়ী হত্যার মূল পরিকল্পনা ও অর্থ জোগানদাতা হিসেবে যাঁদের নাম এসেছে, তাঁরাও খালাস পেয়ে গেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালের ২৫ এপ্রিল দুপুরে শেখ আবুল কাশেমকে খুলনা নগরের স্যার ইকবাল রোডের বেসিক ব্যাংকের সামনে গুলি করেন দুর্বৃত্তরা। এ সময় আবুল কাশেম ও তাঁর গাড়িচালক মিকাইল হোসেন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। ১৯৯৬ সালের ৫ মে সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন আদালতে ১০ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই হত্যা মামলায় তিন আসামি আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। অভিযোগপত্র অনুযায়ী ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ১০ জনের মধ্যে একজন মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। আর দুজন মারা গেছেন। বাকি সাত আসামি জামিনে ছিলেন। মামলাটি উচ্চ আদালতের আদেশে দীর্ঘদিন স্থগিত ছিল।
গত ৩ জানুয়ারি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের চিঠি খুলনার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে আসে। এরপর ওই মামলার অবশিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২৬ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন ওই আদালতের বিচারক (জেলা জজ) মো. সাইফুজ্জামান হিরো।
আবুল কাশেমের ভাতিজা ও হত্যা মামলার তিন নম্বর সাক্ষী শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘রায় শুনে খুব হতাশ হয়েছি। আলোচিত একটি হত্যাকাণ্ডের রায়ে এভাবে সব আসামি খালাস পেয়ে যেতে পারেন, ভাবতেই পারিনি। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে উচ্চ আদালতে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’