ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন ও আসামিকে গ্রেফতার করেছে লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ। একই সময়ে হত্যার শিকার অজ্ঞাত নারীর পরিচয়ও শনাক্ত করা হয়েছে।
লালমনিরহাট সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মশিউর রহমান জানান, স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে গত শুক্রবার (৬ নভেম্বর) সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কালমাটি এলাকার ফাঁকা জায়গা থেকে ৪০ বছর বয়সী একজন নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে প্রথমে উদ্ধার করা লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
তিনি জানান, নিহত ব্যক্তি আদিতমারী উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের মৃত তৈয়ব আলীর স্ত্রী শাহিনা বেগম (৪০)। শাহিনা বেগমের সঙ্গে লালমনিরহাট সদর উপজেলার সাঁকোয়াবাজার এলাকার দবিয়ার হোসেনের (৪২) বিবাহ বহির্ভূত গোপন সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক সময় শাহিনা বেগম বিয়ের চাপ দিলে দবিয়ার হোসেন অস্বীকার জানায়। এক পর্যায়ে দবিয়ার হোসেন ও তার স্ত্রীস দুই জন মিলে ভেলাগুড়ির শাহিনা বেগমকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।
এসআই মশিউর বলেন, গত শুক্রবার (৬ নভেম্বর) পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী দবিয়ার হোসেন শাহিনা বেগমকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ফোনে ডেকে নেয়। তারপর তাকে আদিতমারী সাপ্টিবাড়ী বাজার হয়ে খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কালমাটি তিস্তা নদী এলাকার একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে আনুমানিক ৮টা থেকে ৯টায় শাহিনার গলায় রশি ও ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে এবং লাশ ফেলে চলে যায়। হত্যায় দবিয়ারের সাথে সহযোগীতা করেছে তার স্ত্রী শাহিনা বেগম।
এসআই মশিউর বলেন,‘ আমরা ডিজিটাল ডিভাইস ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে কললিস্ট ধরে আসামি দাবিয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগমকে (৮ নভেম্বর) রবিবার রাতে গ্রেফতার করেছি। সোমবার (৯ নভেম্বর) বিকালে তাদের লালমনিরহাট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালত -১ এ সোপর্দ করলে তারা বিচারক আফাজ উদ্দিনের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি শাহা আলম সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আদালত আসামিদের জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, গত ৭ নভেম্বর রবিবার লাশ উদ্ধারের পর নিহতের ভাই একরামুল হক বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আটকদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।