মো: শামীম হোসেন বাবু (কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী): নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় শুরু হয়েছে কফি চাষ। উপজেলা কৃষি অফিস বলছে এ উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া কফি চাষের উপযোগী হওয়ার কারণে সমতল জমিতে বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষ করা সম্ভব। তাই আগামীতে সম্ভাবনায় এই কফি চাষের পরিধি বাড়ানোর কথা ভাবছে কৃষি বিভাগ। কিন্তু কফি তৈরীতে উন্নত প্রযুক্তি না থাকায় কফি চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষক। আর এ কারনে কফি বাগান বাদ দিয়ে কফির চারা বিক্রিতে বেশি আগ্রহী হয়েছেন এ উপজেলার প্রথম কফি চাষী আব্দুল কুদ্দুস।
শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের কাচারীপাড়া গ্রামের কফি চাষী সুলতান আলীর সাথে। তিনি বলেন, একটি বেসরকারী সংস্থার সহযোগিতায় এবং পরামর্শে ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ জমিতে ১০০ টি কফি চারা রোপন করি। এক বছরের মাথায় আমার বাগানে কফি হতে শুরু করে। এ বছর আমার কফিগাছে প্রচুর পরিমাণে কফি ধরেছে। কয়েকদিন আগে আমার কফি গাছগুলো থেকে প্রায় ৫০ কেজি কফি উত্তোলন করি। কিন্তু বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তির অভাবে কফি তৈরী করছে পারছিনা। কিভাবে কফি তৈরী করতে হয় তাও জানিনা। তাছাড়া এখন পর্যন্ত কেউ কফি কিনতেও আসেনি। তাই কফি চাষ করে অনেকটা হতাশার মধ্যে আছি।
এদিকে নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার প্রথম কফি চাষী আব্দুল কুদ্দুস জানান, আমি দীর্ঘদিন থেকে নার্সারী ব্যবসার সাথে জড়িত। ২০০৭ সালে একটি পত্রিকায় কফি চাষের খবর দেখে কফি চাষের চিন্তা শুরু করি। পরবর্তীতে জেলা নার্সারী মালিক সমিতির সহ সভাপতি হিসাবে বঙ্গভবনে আমার ডাক পড়ে। সেখানে গিয়ে একটি বই পাই। ওই বইটিতে ৬৪ জেলার নার্সারী মালিকদের মোবাইল নম্বর পাই। সেখান থেকে কক্য্রবাজার জেলার এক নার্সারী মালিকের সাথে যোগাযোগ করে ২০০৯ সালে ১৫০ টি কফির চারা সংগ্রহ করি। তখন প্রতিটি চারার মুল্য ছিল ২০ টাকা। শেষে আমি কফি উৎপাদনে সফল হই। কিন্তু উন্নত প্রযুক্তি না থাকার কারনে কফি বাগান বাদ দিয়ে বর্তমানে কফির চারা বিক্রিত বেশি নজর দিয়েছি। বর্তমানে আমি এক ফুট সমান কফির চারা ১ শ টাকা হারে বিক্রি করছি। সে অনুযায়ী ৫ ফুট কফি চারার দাম ৫শ এবং ১০ ফুট হলে এক হাজার টাকায় বিক্রি করছি। এবং বর্তমানে চারা বিক্রি করে আমি বেশি লাভবান হচ্ছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় বলেন, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা কফি চাষের উপযোগী। এ লক্ষে কিশোরগঞ্জ উপজেলায় কফির বাগান বৃদ্ধিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোঃ ওবায়দুর রহমান মন্ডলের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, নীলফামারীর জমি কফি চাষের উপযোগী সে জন্য এ জেলায় কফি চাষে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। কপি তৈরীর বিষয়ে উন্নত প্রযুক্তি না থাকার বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন, আমরা জেলার ১৫০ জন কফি চাষীকে কফি তৈরীসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষন দেওয়ার জন্য কৃষি অধিদপ্তরে লিখিতভাবে জানিয়েছি। প্রশিক্ষন পেলে কফি চাষীরা নিজেই কফি তৈরী করতে পারবে।