আশরাফুজ্জামান খোকন (পঞ্চগড় প্রতিনিধি): পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজলাধীন উত্তর পাড়াস্থ সাবেক জেলা আনসার অ্যাডজুটেন্ট মরহুম আমিনুল ইসলাম এর স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম নেই তার।
প্রশিক্ষক আমিনুল ইসলাম ১৯৬৮ সালে সহকারী আনসার সার্কেল অ্যাডজুটেন্ট হিসেবে প্রথম গাইবান্ধা জেলাতে যোগদান করেন। ১৯৭০ সালে বোদা সার্কেল, ঠাকুরগাঁও মহকুমা, (দিনাজপুর) জেলায় বদলী হয়ে আসার পর ১৯৭১ সালে তিনি বোদা সরকারি মডেল পাইলট স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে সাহসিকতার সাথে অগণিত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর আগে তেঁতুলিয়া হেডকোয়ার্টারেই ৬ নং সেক্টরের বে-সামরিক উপদেষ্টা এ্যাডঃ সিরাজুল ইসলাম, ৬ নম্বর সেক্টর কমান্ডার খাদেমুল বাশার, সাব-সেক্টর কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার সদরুদ্দীন, ক্যাপ্টেন নজরুল হক, ক্যাপ্টেন শাহরিয়ার, লে. মাসুদ ও লে. মতিন এদের নেতৃতে যুদ্ধের পরিচালনার মিটিং চলছিল। সেই মিটিং-এ বোদা সার্কেল আনসার আ্যাডজুটেন্ট আমিনুল ইসলাম সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। এখান থেকে উত্তরাঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক কর্মকান্ড পরিচালনাসহ রিক্রুটিং, প্রশিক্ষণ, অস্ত্রের জোগান দেওয়া সিদ্ধান্ত হয়।
৬ নং সেক্টরের বে-সামরিক উপদেষ্টা এ্যাডঃ সিরাজুল ইসলাম বোদা উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের মানুষদের অস্ত্রের ট্রেনিং এর প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছিলেন আমিনুল ইসলামকে। সে সময় পাক হানাদার বাহিনীর এদেশীয় দোসররা বোদা পানি উন্নয়ন বোর্ডে’র (সাবেক ওয়াপদা) এক কর্মচারী সুফি এর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষক আমিনুল ইসলামকে জীবিত অথবা মৃত ধরার জন্য ৫শত টাকা পুরস্কার ঘোষনা করেন। পরে তিনি ৬ নং সেক্টরের মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক এবং উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. সিরাজুল ইসলামের দেয়া সুপারিশ পত্র নিয়ে ভারতের হলদিবাড়ী মুক্তিক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রশিক্ষক আমিনুল ইসলামের কাছে থেকে বহু মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। এদের মধ্যে কেউ শহীদ হয়েছেন। কেউ বেঁচে আছেন।
মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষক আমিনুল ইসলাম রাজশাহী চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলা সদরের প্রয়াত মৌলভী আব্দুল গফুরের পুত্র। আমিনুল ইসলাম ২০১১ সালে ৫ জুলাই মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুকালে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।